রাষ্ট্র সংস্কারের নামে গণপূর্তে চলছে বদলী বানিজ্য

অধিদপ্তরজুড়ে বদরুলের নেতৃত্বে বিতর্কিত প্রকৌশলীদের দৌরাত্ম্য

বিশেষ প্রতিনিধি
বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: নভেম্বর ২, ২০২৫ ২১:৪০:০৩  আপডেট :  নভেম্বর ২, ২০২৫ ২২:২৬:৫২

‎সরকারি, বেসরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানে প্রভাব বিস্তারের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে স্বার্থকগোষ্ঠীরা। কেউ চাইছে পদ, কেউ ঠিকাদারি, আবার কেউ ব্যস্ত চেয়ার দখল নিয়ে। ক্ষমতার পালাবদলে যেন দখলের মচ্ছব লেগেছে সর্বত্র। গণপূর্ত অধিদফতর সাভার সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ বদরুল আলম খান, ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ঘনিষ্ঠ  এবং বর্তমানে সচিবের আস্থাভাজন হিসেবে খ্যাত। অর্থাৎ আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী মুক্তাদির চৌধুরীর কাছের লোক। সিন্ডিকেট গড়ে তুলে পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ বাগিয়ে দেওয়া, পছন্দের ঠিকাদার আসিফের সঙ্গে যোগসাজশে ব্যবসায়িক পার্টনার হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে কারসাজি, অধিদপ্তরের সেন্টার পয়েন্টজুড়ে বর্তমান সচিব নজরুল ইসলামের রেফারেন্স কাজে লাগিয়ে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক সংগঠনের পরিচয় দিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো, ক্যান্ডিডেট প্রধান প্রকৌশলীদের সাথে পৃথক পৃথক ভাবে যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সহযোগী আসিফকে দিয়ে আগামীতে মেগা প্রকল্প হরিলুটের পরিকল্পনা। এছাড়াও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, সাবেক প্রধান প্রকৌশলীকে চেয়ার থেকে সরানোর পেছনে (বিভিন্ন দেনদরবার তদবির, যাদের পছন্দমত পোস্টিং হয়নি তাদেরকে একত্রিত করে বিশৃঙ্খলা- অরাজকতা সৃষ্টি, ডিপ্লোমা প্রকৌশলী সমিতির নেতাদের সখ্যতায় মতবিনিময় সভা) মূল ভূমিকায় ছিলেন বদরুল।‎

‎বদরুল আলম খানের নিজ জেলা- ব্রাহ্মণবাড়িয়া হলেও জন্ম, বেড়ে ওঠা, শৈশব, কৈশর, যৌবনকাল সবই ঢাকার খিলগাঁও এলাকাতেই। চাকরি জীবনের শুরু থেকেই তার নিজে ভাইয়ের সাথে ডেভেলপার ব্যবসায়ী হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলেন। ভোলার নির্বাহী প্রকৌশলী থাকাকালীন তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে তোলেন। চট্টগ্রাম গণপূর্ত সার্কেল-১ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী থাকাকালীন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা হিসেবে সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী রবিউল আলম মোক্তাদির চৌধুরীর আত্মীয়ের পরিচয়ে তিনি চট্টগ্রামের প্রভাবশালী প্রকৌশলীর পরিচয় দেন। তৎকালীন মন্ত্রীর কাছে ঢাকায় পোস্টিং এর জন্য তদবির করেন। তোফায়েল আহমেদকে দিয়েও তদবির করেন বলে জানা গেছে।

‎এছাড়াও বুয়েট থেকে পাস করা একাধিক মেধাবী প্রকৌশলীদের টপকে অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী পদে খালেকুজ্জামান চৌধুরীকে অধিষ্ঠিত করার লক্ষে শত কোটি টাকা মিশনে নেমেছিলেন বলেও দম্ব করে বলে বেড়াচ্ছেন গণপূর্তের দুর্নীতিতে রেকর্ড সৃষ্টিকারী প্রকৌশলী বদরুল আলম খান। গত ২৮ অক্টোবর খালেকুজ্জামান চৌধুরী প্রধান প্রকৌশলীর চেয়ারে বসার পরপরই বদরুল সারা দেশে কর্মরত নির্বাহী প্রকৌশলীদের লোভনীয় পদে বদলীর জন্য দেন-দরবার শুরু করে দিয়েছেন। প্রতিযোগিতা মূলক সর্বোচ্চ ঘুষ দাতাই পাবেন লোভনীয় নিয়োগ। বিষয়টি অধিদপ্তরে এখন ওপেন সিক্রেট। অবস্থার দৃষ্টে মনে হয় প্রধান প্রকৌশলীও বদরুলের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।