অনিশ্চিত, অর্ধাহার-অনাহারেই যাদের দিনাতিপাত
বাংগালী সংস্কৃতির আদি শেকড় যাত্রাপালা। বিশেষ করে গ্রামীণ বিনোদনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে যাত্রাকে গন্য করা হয়।অথচ আমাদের চিত্তবিনোদনের এই আবশ্যক শিল্পটি আজ হারাতে বসেছে। কোনভাবেই ফিরে আসছে না যাত্রাশিল্পের হারানো অতীত। চলতি বছরও তার ব্যতিক্রম নয়,গত ১০অক্টোবর ২০২৪ সালে নিয়ম অনুযায়ী আরম্ভ হয় যাত্রার মৌসুম।
আজ ৪১দিন পেরিয়ে গেলেও দেশের কোথাও মিলেনি একটি যাত্রা প্রদর্শনীর অনুমতি। তবে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড.সৈয়দ জামিল আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি যাত্রাশিল্পী,মালিক,সংগঠকদের নিয়ে' যাত্রাশিল্পের নবযাত্রা' শীর্ষক একটি সেমিনার আয়োজন করেন এবং ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে ৭দিন ব্যাপি একটি যাত্রা উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।এছাড়াও দেশের দু'একটি জায়গায় যাত্রা প্রদর্শনীর অনুমতি প্রদানের জন্য দাপ্তরিক চিঠি প্রেরণ করেন। এতেও কোথাও কোন সংশ্লিষ্ট মহলের টনক নড়েনি।
সরকারি নীতিমালা থাকা সত্বেও একটি যাত্রা প্রদর্শনীর অনুমতি মিলেনি।এমতাবস্থায় অনিশ্চিত, অর্ধাহার- অনাহারেই দিনাতিপাত করছেন যাত্রা সংশ্লিষ্ট লাখো শিল্পী কুশলি ও তাদের পরিবার-পরিজন।এ প্রসঙ্গে যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদের উপদেষ্টা বিশিষ্ট যাত্রাদল মালিক কবির খান বলেন, অসহায় শিল্পী কুশলিদের রুটি-রুজির বিষয়টি মাথায় রেখে মৌসুমের শুরুতেই দল গঠন করি।
কিন্তু র্দুভাগ্যের বিষয় কোথাও প্রদর্শনী নেই,দল গঠনে অর্থ লগ্নি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি তাতেও দুঃখ নেই,দুঃখ হচ্ছে যাদের প্রয়োজনে এই আয়োজন তাদেরতো ভাগ্যের পরিবর্তন হলো না।প্রবীণ শিল্পী,যাত্রাদল মালিক ও সংগঠক শাহ মোহাম্মদ আলী বলেন,বর্তমান সময়ে যাত্রার রাজধানী খ্যাত ময়মনসিংহ, নেত্রকোনায় হাজার হাজার পেশাদার শিল্পীদের বসবাস।যাত্রা প্রদর্শনী বন্ধ থাকায় এই কর্মহীন মানুষ গুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে।
কে দেবে তাদের মুখে আহার ? ভবিষ্যৎ-ই বা কি তাদের ? এখানে সূর্য ওঠে আলো বিলায়,অথচ যাদের জীবনের অন্ধকার কাটে না।এখানে ফুল ফোটে গন্ধ বিলায়,অথচ যারা নিয়তই ঝরে যায়।জানিনা কবে কাটবে এই জনপদে এই জনগোষ্ঠীর র্দুদিন,নাকি আদৌ কাটবে না ? এমনটাই প্রশ্ন এখন যাত্রাশিল্প সংশ্লিষ্ট সকলের মুখে মুখে।