কৃষি সম্প্রসারণের ডিজি ও আওয়ামী পন্থী কর্মকর্তাদের অপসারণ দাবী

ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম ও অধিদপ্তরে কর্মরত প্রকল্প পরিচালকসহ বিভিন্ন স্তরের পতিত আওয়ামী সরকারের সহযোগীদের অপসারণের দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) কৃষি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন ।
শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ( বিসিএস) কৃষি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস)কৃষি ক্যাডার এসোসিয়েশনের সদস্য সচিব মো. রেজাউল ইসলাম (মুকুল) জানান, বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল অবকাঠামো কৃষির উপর নির্ভরশীল। বিশাল জনগোষ্ঠীর এই দেশে খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে কৃষির গুরুত্ব অপরিসীম। দেশের মোট শ্রমশক্তির ৪০ শতাংশের বেশি মানুষ কৃষি খাতে নিয়োজিত। অথচ প্রতি বছর শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ হারে কৃষিজমি কমে যাচ্ছে। এই বাস্তবতায় সীমিত কৃষিজমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে অধিক ফলন বৃদ্ধির জন্য আধুনিক ও টেকসই প্রযুক্তির প্রয়োগ, প্রতিকূল পরিবেশ সহিষ্ণু নতুন জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানো, তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষির আধুনিকায়ন, শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি এবং বহুমুখীকরণের মাধ্যমে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাগণ নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও জানান, অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের পরও এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের শীর্ষপদ, বিশেষ করে মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে এখনো বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীরা বহাল তবিয়তে রয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আগের দিন অর্থাৎ ৪ আগস্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম, বিভিন্ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকসহ খামারবাড়ির অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারি চাকরি বিধি লঙ্ঘন করে “শেখ হাসিনাতেই আস্থা” শীর্ষক রাজনৈতিক মিছিলে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
তিনি জানান,গত অক্টোবর মাসে মহাপরিচালকের মতো শীর্ষ পদে বসার পরও মো. ছাইফুল আলম মন্ত্রণালয়ের অনৈতিক সমর্থন ও ব্যক্তিস্বার্থে উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইংয়ের পরিচালকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদটিও নিজের দখলে রেখেছেন। তাঁর অদক্ষতার সুযোগ নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় নিয়মবহির্ভূতভাবে অধিদপ্তরের প্রস্তাব ছাড়াই খেয়ালখুশিমতো কর্মকর্তাদের বদলি করে চলেছেন। এসব বদলির মাধ্যমে তিনি বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ন্যায় কৃষিবিদদের মধ্যে বিভাজন তৈরি করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে দুর্বল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব এমদাদ উল্লাহ মিয়া ছিলেন বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের “মুজিব শতবর্ষ” উদযাপন কমিটির একজন সক্রিয় সদস্য এবং বিভিন্ন অনিয়মের প্রত্যক্ষ সহযোগী।
এই বাস্তবতায়, খাদ্য নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম আরও গতিশীল করা জরুরি। সেই লক্ষ্যে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগী জনাব এমদাদ উল্লাহ মিয়াকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদ থেকে এবং অদক্ষ ও পক্ষপাতদুষ্ট জনাব মোঃ ছাইফুল আলমকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদ থেকে অবিলম্বে অপসারণের দাবি জানান।সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন— বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (কৃষি) অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের মধ্যে ড. শাফায়েত আহমেদ সিদ্দিক, হাসিবুল হাসান, বাসিরুল আলম, আরিফ মাহমুদ, কাজী শফিকুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা প্রমুখ