ঢাকা চিড়িয়াখানা ও প্রকল্পের অর্থ লুন্ঠনকারী
৪ আগষ্ঠ কথিত শান্তি মিছিলে নেতৃত্বদানকারী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রকল্প পরিচালক ড. অসীম কুমার এখনও বহাল তবিয়তে
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে ৩৫২ কোটি ২ লক্ষ টাকা ব্যায়ে “সমতল ভ’মিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের সিংহভাগই আত্মসাত হয়েছে। প্রকল্পটি ১/৭/২০১৯ তারিখ হতে শুরু হয়ে ৩০/৬/২০২৩ ইং তারিখে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময়মত প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটির মেয়াদ জুন/২৫ পর্যন্ত বদ্ধিত করা হয়।
প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য ছিল: দেশের সমতল অঞ্চলের অনগ্রসর নৃ-গোষ্ঠির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এবং প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের প্রশিক্ষন ও প্রযুক্তি হস্তান্তর। প্রয়োজনীয় ইনপুট ও প্রশিক্ষনের মাধ্যমে অনগ্রসর এই জন গোষ্টিকে আর্থ সামাজিক উন্নতির ব্যবস্থা করা। অনগ্রসর এই জনগোষ্টির খাদ্য ও পুষ্ঠি নিরাপত্তার উন্নয়ন করা। নির্বাচিত সুফল ভোগীহিসাবে নারীদেও গুরুত্ব দেয়া তথাি নারীর আত্ন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। দেশের নির্বাচিত ২৯টি জেলার ২১০টি উপজেলার নির্বাচিত নৃ-গোষ্ঠি সুফল ভোগীদের ৭টিপ্যাকেজ ভিত্তিক খামার স্থাপনে প্রাণি ক্রয় পূর্বক সহায়তা প্রদান করা। নির্বাচিত সুফল ভোগীদের ১ দিনের প্রশিক্ষন প্রদান করা। প্রকল্পের নির্বাচিত সুফল ভোগীদের মাঝে প্রাণির জন্য অস্থায়ী ঘর নিম্মান করে দেয়া, সরবরাহকৃত প্রাণিদের জন্য ৩ মাসের খাদ্য সহায়তা প্রদান করা এবং পরবর্তী ১ বসরের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ভ্যাক্সিনেশন সুবিধা প্রদান করা। সুফল ভোগীদের নিকট সরবরাহকৃত প্রাণিদের চিকিৎসা সেবা প্রদান, তাদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার জন্য ফিল্ড ফ্যাসেলিটর(বাই সাইকেল সরবরাহসহ) নিয়োগ করা,সুবিধা প্রদানের জন্য সরকারী জমিতে প্রদর্শনী ঘাষের প্লট স্থাপন ও বাজার সৃষ্টির জন্য ঘাষ চাষ বিষয়ক প্রশিক্ষন প্রদান করা। প্রখল্পের সংস্থান অনুযায়ী মোট ১,৩৭,৯৭৬ টি সুফল ভোগী পরিবারের মধ্যে ৭টি প্যকেজের মাধ্যমে (১) উন্নত জাতের ক্রস ব্রিড গাভী-৬৯১০টি সুফলভোগী,(২)সোনালী/দেশী মুরগী-৩৪৫৭৮টি সুফল ভোগী ,(৩)খাকী ক্যাম্বেল হাঁস-৩৪৫২৮ সুফল ভোগী,(৪) ব্লাক বেংগল ছাগল ২০২৪৬টি সুফল ভোগী, (৫) ভেড়া-২৬৩৩৯টি সুফল ভোগী (৬)- মহিষ-৮৪৬০টি সুফল ভোগী,(৭) হৃষ্ঠ পুষ্ঠ করন গরু-৬৯১০টি ক্রয় করে সুফল ভোগীদের মধ্যে ৩ মাসের খাদ্য ঔষধসহ সরবরাহ করা কথা।
এছাড়া ৩৪৭টি ঘাষের প্লট স্থাপন এবং প্রতি উপজেলায় ১ টি করে মোট ১৩৬টি ঘাষের বাজার সুষ্ঠি করার কথা এবং সে অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দও প্রদান করা হয়েছে।
প্রকল্পের আওতায় মোট ১,৩৭,৯৭৬ জন সুফল ভোগীদের বরাবরে সরবরাহকৃত প্রাণীদের রাখার লক্ষ্যে ঘর তৈরী বাবদ মোট প্রায় ৬০ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া আছে। কিন্তু ঘর তৈরী করে না দিয়ে সুফল ভোগীদের ৫০% ক্যাশ টাকা দেয়া হয়েছে ঘর তৈরী করে নেয়ার জন্য। বাকী ৩০ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ঠ উপজেলা কর্মকর্তা ও পিডি ভাগাভাগি করে নিয়েছে। এছাড়া প্রাণির সাথে ৩ মাসের টিকা, ঔষধ, ভিটামিন সরবরাহ দেয়ার জন্য পিডি কর্তৃক ৬ কোটি টাকার উপকরন ক্রয় করে সরবরাহ দেখানো হলেও বাস্তবে কোন উপ করনই সরবরা করা হয়নি। যা সরো জমিনে তদন্ত করা হলে প্রমানিত হবে।
১,৩৭,৯৭৬ টি সুফলভোগী পরিবারের জন্য মোট ৭টি প্যাকেজের প্রাণি ও ঘর তৈরী বাবদ মোট ২৭১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা খরচ করার কথা কিন্তু বাস্তবে ৫০% ও খরচ হয়নি। কারন ৬১ হাজার টাকার গরু ক্রয় করা হয়েছে ২৫,০০০/ টাকা দিয়ে, ৫৫ হাজার টাকার মহিষের বাছুর ক্রয় করা হয়েছে ২২ হাজার টাকা করে, ৪৩ হাজার টাকার গরুর বাছুর ক্রয় করা হয়েছে ২০,০০০/ টাকা করে, ৬ হাজার টাকার ছাগল/ভেড়ার বাচ্ছা ক্রয় করা হয়েছে ২৫০০-৩০০০/ টাকায়, ৩০০ টাকার হাস-মুরগীর বাচ্চা ১৫০-১৭৫ টাকায় ক্রয় করা হয়েছে। গরু-মাহষ, ছাগল-ভেড়া, হাঁস-মুরগী এত নিম্ন মানের ও রোগাক্রান্ত ছিল যে, সরবরাহের ২০-২৫ দিনের মধ্যে ৩০% মারা গিয়েছিল ।নিয়ম অনুযায়ী রোগমুক্ত প্রাণি ক্রয়ের জন্য যে কোয়ারেনটাইন করার কথা আলোচ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি।যা সুফল ভোগীদের নিকট জানতে চাওয়া হলে প্রমানিত হবে।
প্রকল্পের আওতায় সুফলভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে ৩ মাসের পশুখাদ্য ক্রয় করে সরবরাহ বাবদ ৩৩ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হলেও বাস্তবে ৩০% পশুখাদ্য ও ক্রয় করা হয়নি। একইভাবে ঘাষ চাষের জন্য প্রায় ৩ কোটি টাকার বরাদ্দ থাকলেও সারা দেশে ৫০ লক্ষ টাকাও খরচ করা হয়নি। যা সরোজমিনে তদন্ত করলে প্রমানিত হবে। একইভাবে প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন মুদ্রন বাবদ ৩ কোটি টাকা খরচ দেখানো হলেও কোন সুফল ভোগীকে কোন বই/পুস্তিকা সরবরাহ করা হয়নি।
জেলা/উপজেলা কর্মকর্তাদের জ্বালানী ও আনুষাংগিক খাতে রাজস্ব বাজেট হতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু পিডি প্রকল্প হতে এ সকল দপ্তরে জ্বালানী বাবদ ১ কোটি ৬২ লক্ষ এবং আনুষাংগিক খাতে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে সমূদয় টাকা সংশ্লিষ্ঠ ইউএলও এবং পিডি ভাগাভাগি করে আত্নসাৎ করেছে। যা সরোজমিনে তদন্ত করলে প্রমানিত হবে। মোট কথা যে উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি নেয়া হয়েছিল তা শুধুমাত্র প্রকল্প পরিচালক ও মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন মন্ত্রী, সচিব ও ডেক্স অফিসারদের দূনীতির কারনে সে উদ্দেশ্য সফল হয়নি। অধিদপ্তরের সকলের দাবী ড. অসীম কৃমার দাস একজন সুপরিচিত দূনীতিবাজ ও আওয়ামী সরকারের সব্বোচ্চ সুফলভোগী। সে বিগত ১৮ বসর যাবত ই ঢাকায় চাকুরী করেছে । তার বিরুদ্ধে চিড়িয়াখানার জমি বেদখল, লুটপাট, একাধিক অফিশিয়াল সিল ব্যবহার করে টাকা আত্নসাৎ। সে আওয়ামী সরকারের সময় (একই সময়ে) কখনও আইন কর্মকর্তা, কখনও ভুমি কর্মকর্তা, কখনও দরপত্র কমিটির সভাপতি, কখনও জু অফিসার, কখনও পিএইচডির ছাত্র পরিচয় দিয়ে ও সীল ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করেছে।