সুরক্ষা প্রকল্পের পরিচালককে বাইপাস করে ডিএফও’র কার্যাদেশ প্রদান
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা বিভাগ খুলনাতে অফিস ভবন নির্মান কাজের দরপত্রে চরম অনিয়মের অভিযোগ
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, খুলনায় সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় খুলনার বয়রাতে ৬,৬০,০০,০০০/- (ছয় কোটি ষাট লক্ষ) টাকা ব্যয়ে অফিস ভবন নির্মাণ করার জন্য ইজিপি এর মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করে (দরপত্র আইডি নং-৯৯৯৬০৬)। সেমতে বিগত ৩০/০৭/২০২৪ইং তারিখে উক্ত দরপত্রে মোট ৮টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহন করেন এবং তাতে সমঝোতার মাধ্যমে অফিসিয়াল গোপন রেট সংগ্রহকারী ৫টি প্রতিষ্ঠান একই দর দাখিল করেন এবং গোপন রেট সংগ্রহন করিতে না পারা ৩টি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র বাতিল হয়ে যায়।
অভিযোগ উঠেছে, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল, পতিত দুর্নীতিবাজ সরকারের দোসর ও ডিএফও এর নিজস্ব প্রতিষ্ঠানকে সমঝোতার মাধ্যমে কাজটি পাওয়াইয়া দেবার জন্য পিপিআর বহির্ভূত শর্ত আরোপ করেন।
উল্লেখ্য যে, কোন নির্মাণ কাজের জন্য পিপিআর অনুসারে সর্বোচ্চ ৮০% অভিজ্ঞতার সনদপত্র চাইবার বিধান থাকিলেও ডিএফও নির্মল কুমার পাল উদ্দেশ্যমূলকভাবে ৬,৬০,০০,০০০/- (ছয় কোটি ষাট লক্ষ) টাকার অফিস ভবন নির্মাণ কাজের জন্য একক কার্যাদেশে ৬ কোটি টাকার পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদপত্র চান। কিন্তু পিপিআর অনুসারে উক্ত কাজের জন্য সর্বোচ্চ ৫,২৮,০০,০০০/- (পাঁচ কোটি আঠাশ লক্ষ) টাকার পূর্ব অভিজ্ঞতার সনদপত্র চাওয়া যায়। নিজস্ব পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজটি পাওয়াইয়া দেওয়ার জন্য মোটা অংকের লেনদেন হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায় যে, সুরক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক হলেন খুলনা সার্কেলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো। প্রকল্প পরিচালকের নিয়ন্ত্রানাধীন সকল ডিভিশনের যে কোন কোটেশন/দরপত্র/ মূল্যানুমান প্রকল্প পরিচালক অনুমোদন দিয়ে থাকেন। কিন্তু উল্লেখিত দরপত্র অনুমোদনের বিষয়ে ডিএফও নির্মল কুমার পাল এর দুর্নীতির গোমড় ফাঁস হইয়া যাওয়ার ভয়ে প্রকল্প পরিচালককে কোন তথ্য না দিয়ে এবং দরপত্রটি অনুমোদনের জন্য প্রকল্প পরিচালকের কাছে না পাঠাইয়া অত্যন্ত গোপনীয় কায়দায় পিপিআর বহির্ভূত ভাবে প্রধান বন সংরক্ষক (CCF) কে তাহার পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ প্রদানের জন্য অনুমোদন করাইয়া নেন এবং কার্যাদেশ প্রদান করেন। উল্লেখ্য যে, যে কোন কার্যাদেশের অনুলিপি প্রকল্প পরিচালকের বরাবরে প্রেরণ করার বিধান রয়েছে। কিন্তু তিনি প্রকল্প পরিচালককে কোন কার্যাদেশের অনুলিপি প্রেরণ করেন নাই।
সূত্র আরও জানায়, ডিএফও নির্মল কুমার পাল কর্তৃক পিপিআর বহির্ভূত শর্ত আরোপ, গোপন রেট জানাইয়া দেওয়া, বিধি বহির্ভূতভাবে অনুমোদন নেয়া এবং আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাওয়া হইলে তিনি বলেন যে, দরপত্রে কোন অনিয়ম হয়নি এবং আর্থিক লেনদেনও হয় নাই। প্রথা অনুসারে প্রকল্প পরিচালক স্যারই অফিস ভবন নির্মাণ কাজের দরপত্র অনুমোদন দিয়েছেন।
পরবর্তীতে অনুসন্ধানকারী প্রকল্প পরিচালক মিহির কুমার দো এর নিকট ডিএফও কর্তৃক অফিস ভবন নির্মাণ কাজের দরপত্র আহ্বান ও গ্রহনের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন দরপত্রটি অনুমোদনের জন্য আমার নিকট পাঠানো হয় নাই। কিন্তু কিভাবে অনুমোদন হয়েছে, আমি জানি না। তবে কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব। দরপত্রে অংশগ্রহনকারী বঞ্চিত একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার আপ্যান বলেন অবশ্যই দুর্নীতি হয়েছে। আমার প্রতিষ্ঠান বন বিভাগে অনেক অনেক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন। কিন্তু দুর্নীতির কারণে আমি নির্মাণ কাজটি পাই নাই। ভুক্তভোগী/বঞ্চিত ঠিকাদারেরা দরপত্রটি বাতিল সহ সংস্কারের যুগে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা নির্মল কুমার পাল কর্তৃক দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপদেষ্টা, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।