বানিয়াচং ও নবীগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে হরিলুট
এলডিডিপি প্রকল্পের ছাগল -ভেড়ার ঘরের দশ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং ও নবীগঞ্জ উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ সাইফুর রহমানের বিরুদ্ধে এলডিডিপি প্রকল্পের মুরগির ঘর তৈরির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর স্ক্যাভেজিং ছাগল- ভেড়া ভ্যালুচেইন পিজির সদস্যদের নামে বরাদ্দকৃত অর্থ খামারিদের না দিয়ে প্রকল্পের নামে প্রায় ৫৯টি ঘর থেকে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
প্রতিটি ঘরের পিছনে সরকারি বরাদ্দ পঁচিশ হাজার পাঁচশত টাকা,যা খামারিরা নিজ হাতে ঘর তৈরিতে খরচ করবেন বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়। কিছু কিছু জায়গায় ঘর নির্মাণ হলেও অনেকেই ঘর পাননি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের স্মারক নাম্বার ১৭৯৯,৩০-৫-২০২৩ ইং তারিখ ও স্মারক নং ৩৮৩৭(২),১৫/১০/২৩ তারিখ প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস বরাবরে প্রেরিত বাজেট-নির্দেশনায় জানা যায়, প্রতি খামারিকে পঁচিশ হাজার পাঁচশত টাকা ক্লাইমেট স্মার্ট সেড নির্মাণের জন্য খামারীর ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসেবে টাকা পাঠানোর কথা উল্লেখ করা থাকলেও খামারিদের কাছে সেই টাকা পৌঁছায়নি ।
জানা যায় খামারিদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসেবে টাকা না পাঠিয়ে, ব্ল্যাংক চেকে সই করে নেয় ডাক্তার সাইফুর। শুধু তাই নয সেই চেকের মাধ্যমে টাকা উঠিয়ে নিজ হাতে ঘর নির্মাণ করে দেন। এতে প্রতিটা ঘরের নির্মাণ ব্যয় সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১১ হাজার টাকা হবে বলে জানায় খামারিরা। তথ্যসূত্রে উঠে আসে প্রকল্পের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধ পন্থার আশ্রয় নেয় এই অর্থলোভী সাইফুর। প্রতিটা সেডের জন্য তিনি তার ব্যক্তিগত লোক দিয়ে কাজ সম্পাদন করেন।
নিম্নমানের মালামাল দিয়ে বানিয়াচং ও নবীগঞ্জ দুই উপজেলায় প্রকল্পের ৫৯টি ঘর নির্মাণ করে। গত পাঁচটি প্রকল্পে একই ধরনের কার্যক্রম চালিয়েছে সাইফুর। অর্থলোভী এবং প্রতারক সাইফুর এভাবেই গরিব অসহায় খামারিদেরকে ঠকিয়ে যাচ্ছেন দিনের পর দিন। শুধু তাই নয় সাইফুর আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে প্রায় চার বছর দুই উপজেলার দায়িত্বে থাকার কারনে অবৈধ পন্থায় অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান তিনি।
নানা উপায়ে তিনি বিভিন্ন প্রকল্প যেমন হাওর অঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প,এনএটিপি-২, এলডিডিপি, প্রানিপুষ্টির ও রাজস্ব খাত থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। দুই উপজেলা যত প্রকল্প আছে বা আসবে প্রতিটা থেকেই অর্ধেকের বেশি কমিশন আদায় করে নেন ডাঃ সাইফুর। তদন্তে উঠে আসে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মোঃ আব্দুল কাদের নেতৃত্বে সকল অপকর্ম করে আসছেন এই সাইফুর। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর পরিচালক সিলেট একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে অবৈধ এবং অনৈতিক কাজের জন্য ডাঃ সাইফুর রহমানকে বানিয়াচং থেকে বদলির আদেশ প্রদান করেন।
এতে ক্ষুব্ধ হন হবিগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল কাদের। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বিধিবিধান এবং পরিচালক প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সিলেট কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তার কার্যালয় থেকে একটি অবৈধ আদেশের মাধ্যমে পূর্ণবহাল করেন ডাক্তার সাইফুর রহমানকে। যার স্মারক নম্বর ২৮৩ তারিখ ৩০/০৪/২০২৪ ইং। এতে করে তিনি আরো বেপোরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে অভিযোগে উঠে আসে। এ বিষয়ে ডাঃ সাইফুর রহমান ও জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করে তাদেরকে পাওয়া যায়নি। প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক ডাক্তার হিরণময় বিশ্বাসকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাকেও পাওয়া যায়নি।