গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন মাহফুজুল
গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামিম আকতারের স্টাফ অফিসার মোহাম্মদ মাহফুজুল আলম অধিদপ্তরে আছেন বহুবছর ধরে। প্রকৌশল ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের দপ্তর একাধিকবার বদল হলেও মাহফুজুল রয়ে গেছেন । প্রধান প্রকৌশলীর স্টাফ অফিসার হিসেবেই আছেন বেশ কয়েকবছর ধরে।
অথচ বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস-(১) এর বিধানমতে একই পদে ৩ বছর অতিক্রান্ত হলে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও এর অধীনস্থ দপ্তর বা পরিদপ্তসমূহের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নতুন পদে বা স্থানে বদলী করার কথা বলা আছে। কিন্তু স্টাফ অফিসার মাহফুজুল নির্বাহী প্রকৌশলীর পদমর্যাদা হওয়া সত্ত্বেও তার বদলীর বিয়য়ে গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষের এ নিয়ে কোনো তাগিদ নেই। যে কারণে তিনি বহাল তবিয়তে প্রধান প্রকৌশলীর কাছাকাছি থেকে রাজত্ব করে আসছেন দীর্ঘবছর।
মাহফুজুল আলম একই পদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করায় অভিযোগ উঠেছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের ঠিকাদার ও তদবিরবাজদের সাথে বিশেষ সখ্য সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তার। একই সাথে গড়ে তুলেছেন একটি অসাধু সিন্ডিকেট। প্রধান প্রকৌশলী শামীম আক্তারের সাথে সাক্ষাৎ বিনিময় ও সব ধরনের দেন-দরবারসহ এই সিন্ডিকেটকে কেন্দ্র করেই তৈরি করেন তিনি। তার সিন্ডিকেটের বাইরের কোন ব্যক্তিকে প্রধান প্রকৌশলীর সাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ পর্যন্ত তিনি দেন না। কমিশনের বিনিময়ে এই সিন্ডিকেটকে তিনি ‘বিশেষ সুবিধা’ আদায় করে দেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সারাদেশের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছ থেকে ১ পার্সেন্ট করে টাকা নেয়ার অভিযোগও রয়েছে মাহাফুজুলের বিরুদ্ধে। এর বাইরে সারাদেশের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছ থেকে প্রধান প্রকৌশলী শামিম আকতারের নামে যে ৩ পার্সেন্ট কমিশন আসে সেটার মাধ্যম হিসেবেও তার নাম উঠে এসেছে অনুসন্ধানে। কাজ পাইয়ে দেয়ার ক্ষেত্রেও তিনি ক্ষমতাবান হিসেবেও নিজেকে পরিচিত করে তুলেছেন বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা।
ওয়ার্কিং জোনে নির্বাহী প্রকৌশলীদের বদলীর ক্ষেত্রে ১ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেন হয় এবং এসব লেনদেনের বিষয়ে প্রধান প্রকৌশলীর পক্ষে দর কষাকষি করে সমঝোতার কাজটিও তিনি করেন। প্রকৌশলীদের এসব পদোন্নতি ও বদলীবাণিজ্যের ক্ষেত্রে সাবেক মন্ত্রী-সচিবদের কাছে তাদের ভাগ পৌঁছে দিতেন তিনি। প্রধান প্রকৌশলী শামিম আকতার ও সাবেক মন্ত্রী-সচিবদের একজন বিশ্বস্ত মাধ্যম হিসেবেও অনুসন্ধানে তার নাম উঠে এসেছে।
এসব বিষয়ে জানতে তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘এসব কথা সত্য নয়। বেতন ভাতার বাইরে আমার কোনো আয় রোজগার নেই। দুর্নীতির সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। আমার বিরুদ্ধে এসব কথা যারা ছড়াচ্ছে তারা আমার শত্রু। প্রকৃতপক্ষে আমি একজন সৎ মানুষ।’ এসব বিষয় নিয়ে প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামিম আকতারের সাথে কথা বলার জন্য তার হোয়াটসঅ্যাপে ক্ষুদেবার্তা পাঠালেও তিনি জবাব দেননি।