মাগুরায় আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

মাগুরা জেলা শহরের পাশে বেলনগর এলাকায় রয়েছে আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার। এই খামারে প্রজনন কর্মকর্তা (পিডিও) খাদেজা আক্তারের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি বরাদ্দের টাকা নয়ছয় করে আসছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য চাইতে গেলে তাকে অফিসে পাওয়া যায়নি। মুঠোফোনে কয়েক দফা চেষ্টা করা হয়। জানা গেছে, খাদেজা আক্তার নিয়মিত অফিস করেন না। তার স্বামী প্রশাসনের একজন সরকারি কর্মকর্তা বিধায় সেই দাপটে আরও বেশি বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি এবং নিয়মিত অফিসও করছেন না।
এছাড়াও খামারের হাঁস ও ডিম বিক্রিতে সিন্ডিকেট করে রাতের আধারে হাঁস ও ডিম বিক্রিও অভিযোগ রয়েছে। প্রায় দুই বছর হলো তিনি এই খামারের কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের পর থেকে অফিসে অনিয়মিত তিনি। অফিস সময়ে তার দেখা পাওয়া যেনো এক রকমের ভাগ্যের ব্যাপার। অফিসিয়াল ভাবে বিভিন্ন প্রজেক্টের আয় ব্যায় নিয়েও রয়েছে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বড় রকমের অনিয়ম। যা তিনি নিজেই সেখানকার কর্তা হিসেবে যা ইচ্ছা তাই করে থাকেন।
এলাকাবাসীও এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের কথা জানান। রোববার অফিস চলাকালীন সময়ে দেখা যায়, খামারের গেইট তালাবদ্ধ। যোগাযোগের এক পর্যায়ে খামারের এক কর্মচারি গেইটের বাইরে থেকে জানায় ভিতরে প্রবেশ করা যাবে না। কারণ এর আগেও অনিয়ম ও দূর্নীতির দায়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে খামারের লোকেদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এজন্য তারা ভিতরে কাউকে ঢুকতে দেন না। গণমাধ্যম কর্মী পরিচয় দিয়েও ভিতরে প্রবেশ করা যায়নি। তবে ওই কর্মচারি জানান, খাদেজা ম্যাডাম ঢাকায় অবস্থান করছেন।
নিয়মিত অফিস করে কিনা জানতে চাইলে, তিনি কোনো উত্তর দেননি। এরপর আরো একজন কর্মচারি গেইটের ভিতরে তথ্য চাইলে তিনি বলেন তারা তিনজন কর্মচারি আছেন এখানে। ম্যাডাম (খাদেজা আক্তার) প্রায় সময়ই বাইরে থাকেন। সন্তানদের নিয়ে নাম মাত্র কোয়াটারে থাকেন এখানে। তথ্য চাইলে তারা বলেন ম্যাডামের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। গেইটের ভিতর থেকে দেখা যায়, খামারের ভিতরে গরু ছাগলের চারণভূমি। অবাদে বড় বড় গরু ঘুরছে, ছাগল ঘুরতে খামারের ভিতর দিয়ে। খামারে হাঁসের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দেখা যায়নি। ভিতরে দেখে মনে হবে যেনো মামা বাড়ির সংসার, এটা কোনো সরকারি খামার নয়। এলাকাবাসী জানায়, প্রয়োজনের সময় তারা খামার থেকে কোনো রকম সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না। রাতের অন্ধকারে হাঁস ও ডিম বিক্রি করা হয় এই খামার থেকে।
এখন যে কর্মকর্তা রয়েছেন খাদেজা আক্তার তাকে এলাকার মানুষ কখনোই খামারে দেখেনি। তিনি আদৌ অফিস করেন কিনা তাও জানা নেই এলাকাবাসীর। তারা বলেন সরকারের লাখ লাখ টাকা এই খামারে বরাদ্ধ আসে। তার কোনো সঠিক প্রয়োগ নেই এখানে। খেয়াল খুশি মত এবং কাগজে কলমে সবকিছু ঠিক রেখে চুরির এক অভয়ারণ্য গড়ে তুলেছে এই খামার। এছাড়াও এলাকাবাসী প্রয়োজনের সময় হাঁস বা ডিমের জন্য গেলে তাদেরকে দেওয়া হয় না। বরং রাতের অন্ধকারে তা বাইরের ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে।
যা রীতিমতো নিয়ম বহির্ভূত। এমন নানা অনিয়ম আর দূর্নীতির অভিযোগে এই কর্মকর্তা খাদেজা আক্তারের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত সাপেক্ষে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ তাকে বদলির জোর দাবি জানান এলাকার সচেতনমহল। এসব অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খাদেজা আক্তার জানায়, তিনি ঢাকায় মিটিংয়ে অবস্থান করছেন। তাই তিনি এসব বিষয়ে কথা বলতে পারবেন না। খামারের ব্যাপারে তথ্য লাগলে তা ঢাকা অফিস থেকে নিতে বলেন তিনি। জেলা অফিসের সকল তথ্য তিনি ঢাকা অফিসে জমা দিয়েছেন বলেও জানান। নিয়মিত অফিস কেনো করেন না? জানতে চাইলে তিনি কথার কোনো সদোত্তর দিতে পারেনি। খামারের অন্যান্য অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কল কেটে দেন।