শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের হিসাব রক্ষক শেখ নাসির উদ্দিন
অবৈধ উপার্জনের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুললেও থেকে গেছেন ধরাছোয়ার বাইরে
শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে রাম রাজত্ব কায়েম করেছেন হিসাব রক্ষক শেখ নাসির উদ্দিন। প্রতারণা, মিথ্যাচার,গুন্ডা বাহিনী লালন করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালকে তার কব্জায় নিয়েছেন। তার অবৈধ কাজকর্মের বিবরণ তুলে রিপোর্ট করতে গেলে দেয়া হয় বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি।
শেখ নাসির উদ্দিন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দীর্ঘ বছর যাবৎ হিসাব রক্ষক হিসেবে কাজ করে আসছেন। এরই মধ্যে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের পাহাড়। উক্ত হাসপাতালের সকল ঠিকাদার ও সাপ্লাইয়ার হিসাবরক্ষক নাসির উদ্দীনের হাতে জিম্মি। তার এই সকল অবৈধ কাজের সহযোগিতা করে তার শ্যালক শেখ জিয়াউর রহমান। প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর দৈনিক আজকের সংবাদ এর প্রতিবেদককে তিনি বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।
গত ১১ডিসেম্বর দৈনিক আজকের সংবাদ প্রতিবেদনে সরেজমিনে উঠে আসে, শেখ নাসির উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি খুলনা, বর্তমানে তিনি মিরপুরের ১৭/৩/বি/৩ তৌহিদ টাওয়ার টোলারবাগ স্ত্রীর নামে তিনটি ফ্ল্যাট ক্রয় করে বসবাস করছেন। তিনটি ফ্ল্যাটের বর্তমান বাজার মূল্য আনুমানিক ৫ কোটি টাকা। বিলাসী জীবন পরিচালনার জন্য রয়েছে ঢাকা মেট্রো এঅ-৪২-৬৯৬৪ প্রিমিও ব্র্যান্ডের একটি গাড়ি। এই গাড়ি করে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাতায়াত করেন, নাসিরুদ্দিনের ব্যবহারের জন্য রয়েছে আলাদা গাড়ি। উক্ত গাড়িটি শেখ নাসির উদ্দিনের শাশুড়ি আফরোজা বেগমের নামে ক্রয় করেন।
মিরপুরে জিহা এন্টারপ্রাইজ (১৭/৫ মাজার মার্কেট টোলারবাগ মিরপুর ১) নামে রয়েছে একটি বিশাল জেনারেল স্টোর যা পরিচালনা করেন স্ত্রী এবং আত্মীয়-স্বজন। এছাড়া গ্রামের বাড়ি এবং বিভিন্ন শহরে রয়েছে কোটি কোটি টাকা সম্পদ। গত১৮ ডিসেম্বর আজকের সংবাদ এর প্রতিবেদনের প্রতিবাদ হিসেবে একটি জাতীয় দৈনিকে শেখ নাসির উদ্দিন বিজ্ঞাপন আকারে লক্ষ টাকার বিনিময়ে প্রতিবাদ প্রকাশ করেন।কিন্তু দুঃখের ব্যাপার উক্ত জাতীয় দৈনিকের ই-পেপার এবং প্রকাশিত পত্রিকা বাজারে পাওয়া যায়নি।
গভীর অনুসন্ধানে আরো উঠে আসে, ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে আয়কর রিটার্নে (টিআইএন নম্বর -৭৯৮৪২৫৮৯৮৯৯০) দেখিয়েছেন নিট সম্পদের পরিমাণ ১৮ লাখ ৬৮ হাজার ৬২৪ টাকা। ১০ ভরি স্বর্ণ যার মূল্য জানা নাই উল্লেখ করেছেন। ফার্নিচার ও ইলেকট্রিক্যাল দেখিয়েছেন ২লাখ টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে এসে তা দাঁড়ায় ২০লাখ ৪৭হাজার ৮২৬টাকা।কিন্তু প্রতারক নাসির তিনটি ফ্ল্যাট এবং গাড়ি তার আয়কর নথিতে উল্লেখ করে নাই।
এ বিষয়ে তার প্রতিষ্ঠিত কোটি টাকার দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করা শ্যালক / সমন্ধির ছেলে মোঠো ফোনে জানায় ঢাকা মেট্রো এঅ-৪২-৬৯৬৪ গাড়িটি শেখ নাসির উদ্দিনের।তিনি তার টাকা দিয়ে দাদির নামে গাড়িটি ক্রয় করে তিনি ব্যবহার করছেন। বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্ট ও মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করে উনি উক্ত টাকা পরিশোধ করেন। ফ্ল্যাটের ব্যাপারে জানতে চাইলে সে জানায় এখানে তিনি দুটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। উক্ত বিষয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রহরী জানায় আমার জানা মতে উনি দুইটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। গাড়ি ও দোকান শেখ নাসির উদ্দিনের।