শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্যের প্রয়াণ দিবস
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সমাজসেবক, শহীদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্যের প্রয়াণ দিবস ৮ আগস্ট। শহিদ প্যারী মোহন আদিত্য ব্যক্তি জীবনে পূর্বপাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) এর সৎসঙ্গের সহ-সম্পাদক, সৎসঙ্গের মুখপাত্র, ‘সৎসঙ্গ সংবাদ’ পত্রিকার সহ-সম্পাদক হিসেবে নিজেকে সংবাদপত্রসেবীর মতো মহান পেশায় নিয়োজিত করেছিলেন। তিনি সৎসঙ্গের ভাবাদর্শের একজন সহ-প্রতিঋত্বিক ছিলেন। যার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে “বাঁচা বাড়ার” মন্ত্র হিসেবে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের আদর্শ প্রচার করতেন এবং জনহিতকর ও কল্যাণকর কাজে মানুষকে অনুপ্রাণিত করার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।
তিনি ছিলেন দেশপ্রেমী একজন সমাজসেবক, নীতি ধর্মের ধারক-বাহক, মানবতাবাদী চেতনার মানুষ। তিনি তাঁর লেখার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেন। বাঙালি সংস্কৃতির একজন একনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। নাটক, যাত্রা, পালাগান তথা দেশাত্মবোধক সংস্কৃতির চর্চায় তিনি নিজেকে ব্যাপৃত রাখতেন এবং প্রজন্মের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতেন এইসব শুভবোধ। তিনি মানবতার ধর্ম বিশ্বাস করতেন। মানুষ ক্ষতিগস্ত ও বিপদগ্রস্ত হলে তাদের পাশে দাঁড়ানো, বিপদ মুক্তির জন্য সাহায্য করাই তাঁর ধর্ম ও কর্ম ছিল। তিনি ১৯৫৮ সালে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের ব্যবহৃত পাদুকা ভারতের দেওঘর থেকে বহন করে এনে আশ্রম প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেন।
১৯৭০ সালে তদানিন্তন পূর্বপাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয়। শত শত মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হয়। প্যারী মোহন আদিত্য তাঁর কর্মীবাহিনীসহ নিজে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাদের সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য। ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ পূর্বপাকিস্তান সৎসঙ্গ (সৎসঙ্গ বাংলাদেশ) এর প্রতিনিধি হয়ে পূর্বপাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের আপদকালীন ফান্ডে বঙ্গবন্ধুর হাতে তাঁর বাসভবনে সৎসঙ্গের পক্ষে সাহায্য প্রদান করেন। এ ছাড়াও মুক্তিযুদ্ধকালীন অত্র অঞ্চলের গেরিলা মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। একাত্তরের অগ্নিক্ষরা উন্মাতাল সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দৃষ্টি পড়ে সৎসঙ্গ আশ্রমে।
টাঙ্গাইল জেলা শহর থেকে বত্রিশ কিলোমিটার উত্তরে ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের পার্শ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে একটি আশ্রম। এটি একটি জনকল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠান। মহামানব শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের আদর্শে এটি প্রতিষ্ঠিত। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আশ্রয়হীন মানুষ এখানে এসে আশ্রয় গ্রহণ করতো। যে কারণে পাকিস্তানী সেনাদের সাথে সহযোগিতাকারী দালালদের শ্যেন দৃষ্টিতে এটি নিপতিত হয়, বারবার হুমকির মুখে পড়ে এবং হামলা চলতে থাকে এখানে।
মুক্তিযোদ্ধারা আস্তে আস্তে সংগঠিত হওয়ার সাথে সাথে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দস্যুরাও পুরো পাকুটিয়া এলাকাতেই চালাতে থাকে হত্যা, লুণ্ঠন আর ধর্ষণ। ঘরে ঘরে আগুন লাগিয়ে বহ্নি উৎসব করতে থাকে পাষণ্ডরা। এই ছোটো গ্রামটির মায়া ছেড়ে অনেকেই দেশ ত্যাগ করতে থাকেন। কিন্তু প্যারী মোহন আদিত্য পালিয়ে গেলেন না। একাত্তরের ৪ এপ্রিল, বেলা বারোটার সময় সৎসঙ্গ আশ্রমের বিপদঘণ্টা বেজে ওঠে। সঙ্গে মানুষের আর্তচিৎকার, ছুটাছুটি, বিকট গুলির শব্দ এবং চারপাশের বাড়ি-ঘরে আগুনের লেলিহান।
বিপদঘণ্টা বেজে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সবাই যে যার মতো লুকিয়ে পড়েন। আবার ১৮ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী টাঙ্গাইল থেকে ময়মনসিংহে যাওয়ার সময় পাকুটিয়া সৎসঙ্গ আশ্রমে হামলা চালায়। তাদের ছোড়া শেলের আঘাতে আশ্রম মন্দিরের চূড়া হেলে পড়ে। প্যারী মোহন আদিত্য মূল মন্দিরে ধ্যানস্থ অবস্থায় থাকায় তাঁকে মূর্তি ভেবে গুলি করা থেকে বিরত থাকে। বর্বর হানাদার বাহিনী শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্রের প্রতিকৃতিকে জীবন্ত মানুষ ভেবে গুলি করে। পরে কাছে গিয়ে দেখে সেটি আসলে একটি প্রতিকৃতিমাত্র। অথচ, তার পাশেই প্যারী মোহন আদিত্য ধ্যানমগ্ন ছিলেন। এ-অবস্থায় তাঁকেও মূর্তি ভেবে গুলি করা থেকে বিরত থাকেন। আর এভাবেই এ-যাত্রা তিনি প্রাণে বেঁচে যান। পাকুটিয়া আশ্রমে প্রায়ই মুক্তিযোদ্ধারা আসতেন। অনেক মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে প্যারী মোহন আদিত্যের যোগাযোগ ছিল। তিনি গোপনে তাঁদের আশ্রয়, খাদ্যসহ বিভিন্ন সহায়তা দিতেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি কাদেরিয়া বাহিনী খ্যাত ১১নং সেক্টর ১নং হেড কোয়ার্টার কোম্পানীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা ও মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় প্রদানকারী হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ পান। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের সময় অতিবাহিত করেন সেবার মহান মন্ত্র নিয়ে। এই তথ্য রাজাকার কর্তৃক প্রচার হয়ে গেলে ১৯৭১ সালের ২১ মে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী সৎসঙ্গ আশ্রম এর পাশে পাকুটিয়া বাজারে সাঁড়াশি আক্রমণ চালালে প্যারী মোহন আদিত্য পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। তাঁকে আটক করে তাদের টর্চার সেলে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে। (তথ্যসূত্র: মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধি/ যুদ্ধক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ ও তথ্যাবলি, ঘাটাইল সেনানিবাস)। তবে তিনি প্রজ্ঞাবান হওয়াতে হানাদারদের হাত থেকে নিজেকে মুক্ত করতে সক্ষম হন। কিন্তু ঘাতকরা হাল ছাড়েনি।
মনে প্রশ্ন জাগে, এত মানুষ থাকতে আলবদর, আলশামস, রাজাকার ও শান্তিবাহিনী কেন বাবাকেই বারবার লক্ষ্য করল? কেন তাঁকেই বারবার ঘাতকের কবলে পড়তে হয়েছে? আশ্রমে মুক্তিযুদ্ধের বিশাল বাহিনীর একটা ট্রেনিং তথ্য বিনিময়ের সেল ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে, ১৯৭১ সালের ৮ আগস্ট পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা পিছু ছাড়েনি। পাকুটিয়া বাজার থেকে বেলা প্রায় তিনটার দিকে আকাশে মাথা উঁচু করে থাকা আশ্রমের মিনারটির উপর আবারও শেল বর্ষিত হয়। শেলের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে ধুলায় লুটিয়ে পড়ে ১৮ এপ্রিলের আঘাতে হেলে পড়া মিনারটি।
তারপর বর্বর উল্লাসে মেতে ওঠা পিশাচের একটি দল গুলি ছুড়তে ছুড়তে প্রবেশ করে আশ্রম এলাকায়। আশ্রমে প্রবেশ করে ভয়াবহ তাণ্ডব শুরু করে এবং প্রেট্রোল ঢেলে দিয়ে আশ্রমের মন্দির, অফিস, বসতবাড়িসহ সমস্ত কিছু আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। আর এই আশ্রমে প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের রণাঙ্গণের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে প্যারী মোহন আদিত্যকে প্রথমে গুলি করে, তার পেটে গুলি লাগে এবং তিনি লুটিয়ে পড়েন। তারপরও তিনি অসীম সাহসে রুখে দাঁড়ালেন হায়নাদের বিরুদ্ধে। ওদের টনক নড়ে উঠলো। চিৎকার করে একজন আর্মি অফিসার গালি দিয়ে উঠলো। কিন্তু তিনি অনড় তাঁর চোখ থেকে যেন ঘৃণা ঠিকরে পড়ছিলো। দূর থেকে একজন সৈনিক তাকে লক্ষ্য করে আবারও গুলি ছুড়লো। পর পর তিনটি গুলি বাবার দেহ ভেদ করে বেরিয়ে গেলো। তিনি মূল মন্দিরের সিঁড়ির পাশে পড়ে গেলেন। পাশবিক উত্তেজনায় উন্মত্ত সৈনিকটি দৌড়ে গিয়ে তার মুখের উপর প্রচণ্ড আক্রোশে লাথি মারলো এবং চিৎকার করে উঠলো ‘বল মুক্তি কাহা?’ বেয়নেট দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করার ফলে তার বুকের রক্তে মাটি ভিজে গিয়েছে। প্রচণ্ড যন্ত্রণায় তাঁর মুখ কুঁকড়ে যাচ্ছে। তবে তাঁর সারাদেহ ক্ষতবিক্ষত হলেও তিনি মুখ খোলেননি।
পিশাচেরা আবারও তার হাত ধরে নির্মমভাবে টানতে টানতে আরও সামনে নিয়ে এলো। কয়েকজন পাকপশুসৈনিক তাদের হাতের উদ্যত বেয়নেটের খোঁচায় খোঁচায় বাবার শরীর আরও ঝাঁঝরা করে দিলো। এই দৃশ্য দেখে আড়ালে পালিয়ে থাকা আশ্রমের একজন কর্মী ছুটে এলেন। তাকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। সমস্ত আশ্রম ভবনে ওরা তন্ন তন্ন করে খুঁজলো মুক্তিযোদ্ধাদের। কিন্তু কোথাও কাউকে না পেয়ে এলোপাথারি গুলি ছুড়তে ছুড়তে রাস্তায় বেরিয়ে গেলো এবং সমস্ত গ্রামটি হয়ে উঠলো শ্মশানের মতো। প্রায় তিন ঘণ্টা পর সন্ধ্যার প্রার্থনা শেষে (৬:২৯ মিনিটে সন্ধ্যার প্রার্থনা) তিনি শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্যারী মোহন আদিত্যের মরদেহ পড়ে ছিল আশ্রমে।
পরে তাঁরই বড় ভাই রাস বিহারী আদিত্যসহ স্থানীয় কয়েকজন গোপনে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন। এইসব ঘটনা থেকে স্পষ্ট বুঝতে পারা যায়, কেন প্যারী মোহন আদিত্যকে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসর আলবদর আলশামস রাজাকাররা বারবার টার্গেট করে আর কেনই বা তাকে নির্মম আঘাতের মুখে পড়তে হয়। তিনি ছিলেন দেশপ্রেমী একজন সমাজসেবক, নীতি ধর্মের ধারক-বাহক, মানবতাবাদী চেতনার মানুষ। তিনি তাঁর লেখার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেন। বাঙালি সংস্কৃতির একজন একনিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব ছিলেন তিনি। নাটক, যাত্রা, পালাগান তথা দেশাত্মবোধক সংস্কৃতির চর্চায় তিনি নিজেকে ব্যাপৃত রাখতেন এবং প্রজন্মের মধ্যেও ছড়িয়ে দিতেন এইসব শুভবোধ।
আর এ-জন্যই তাঁকে দেশবিরোধী শক্তির আক্রোশের মুখে পড়তে হয় বারবার এবং নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়। মুক্তিযুদ্ধের গবেষক শফিউদ্দিন তালুকদারের ‘একাত্তরের গণহত্যা যমুনা পর্ব ও পশ্চিম তীর’, জুলফিকার হায়দারের ‘ঘাটাইলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য’, বাংলা একাডেমি প্রকাশিত রশিদ হায়দার সম্পাদিত ‘স্মৃতি : ১৯৭১’, রাস বিহারী আদিত্য সম্পাদিত ‘শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র ও সৎসঙ্গ বাংলাদেশ’, রশিদ হায়দার সম্পাদিত ‘খুঁজে ফিরি’, পান্না কায়সার সম্পাদিত ‘হৃদয়ে একাত্তর’, ‘টাঙ্গাইলের রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধ’ ড. আশরাফ সিদ্দিকীর বিভিন্ন গ্রন্থ, কবি সমরেশ দেবনাথের বিভিন্ন গ্রন্থ, শফি কামাল বাদল সম্পাদিতÑ ‘টাঙ্গাইল: আলোকে-উদ্ভাসে’ গ্রন্থে এবং বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ জ্ঞানকোষ’ গ্রন্থে, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত সচিত্র বাংলাদেশ এ, ‘দেশাত্মবোধ ও আধ্যাত্মিক চেতনায় শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য’, আঞ্চলিক পত্র-পত্রিকা ও সাহিত্য ম্যাগাজিন ও জাতীয় পত্রিকাসহ ভারত থেকে প্রকাশিত পত্র-পত্রিকাতেও প্যারী মোহন আদিত্যের এ সংক্রান্ত তথ্যাবলি রয়েছে। বাঙালি জাতি শহীদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্যের আত্মত্যাগের কথা কখনোই ভুলবে না। তাঁর স্মরণে পাকুটিয়া সৎসঙ্গ তপোবন বিদ্যালয়ের সামনে স্মৃতিস্তম্ভ¢ করা হয়েছে। এ ছাড়া টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের পাকুটিয়া বাসস্ট্যান্ড থেকে সৎসঙ্গ আশ্রম পর্যন্ত সড়কটি ‘শহীদ প্যারী মোহন আদিত্য সড়ক’ নামকরণ করা হয়েছে।
শহিদ প্যারী মোহন আদিত্যের জীবন ও কর্মময় জীবন সম্পর্কে প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবীরা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও আলোচনা সভায় আলোকপাত করেছেন। যেমন- বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক- গবেষক, উপন্যাসিক, লোকসাহিত্যিক এবং শিশুসাহিত্যিক ড. আশরাফ সিদ্দিকী লিখেছেন, ‘তিনি আছেন সৎসঙ্গে সবচেয়ে সত্য হয়ে’। মহান মুক্তিযুদ্ধের সূচনালগ্নে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা এবং বেতার কেন্দ্রের সংগঠকদের মধ্যে একজন অগ্রদূত বেলাল মোহাম্মদ লিখেছেন, ‘সৎসঙ্গের কিংবদন্তি প্যারী মোহন আদিত্য’। সাংবাদিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট সন্তোষ গুপ্ত লিখেছেন, ‘অনুভবে শহিদের অমর স্মৃতি’। আবৃত্তিশিল্পী ও প্রশিক্ষক, স্বাধীন বাংলা বেতারের শব্দসৈনিক আশরাফুল আলম লিখেছেন, ‘সমর্পিত একজন মানুষ শহিদ প্যারী মোহন আদিত্য’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-রেজিস্ট্রার মরমি সাধক মোঃ এন্তাজ উদ্দিন লিখেছেন, ‘কথা ছিল অমর হবে’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ বেলায়েত হোসেনের ভিডিও চিত্রে, ‘সৎসঙ্গের অবিচ্ছেদ্য অংশ শহিদ প্যারী মোহন আদিত্য’। লেখক, শিক্ষক, গবেষক, সমাজ-সংস্কারক ও রুদ্রবীণা সঙ্গীত বিদ্যালয়- মৌলভীবাজার এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, অধ্যাপক ড. রজতকান্তি ভটাচার্য্য লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ ও সৎসঙ্গের শহিদ প্যারী মোহন আদিত্য’।
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, তথ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ‘সচিত্র বাংলাদেশ’ এ সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সভাপতি কুঞ্জ বিহারী আদিত্য লিখেছেন, ‘দেশাত্মবোধ ও আধ্যাত্মিক চেতনায় শহিদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য’। সৎসঙ্গ বাংলাদেশের সম্পাদক ধৃতব্রত আদিত্য লিখেছেন, ‘সৎসঙ্গ বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ ও সৎসঙ্গের অবদানে শহীদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য’। পাবনার কৃতিসন্তান মোঃ রবিউল হাসান (ফিরোজ) লিখেছেন, ‘কীর্তিমান মানুষের আত্মত্যাগে এই বিজয়’। শ্রীজগদীশ চন্দ্র মহলদার (সাবেক সভাপতি, সৎসঙ্গ বাংলাদেশ) লিখেছেন, ‘স্মৃতির মণিকোঠায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও সৎসঙ্গ’। শিক্ষক ও নাট্যব্যক্তিত্ব মণীন্দ্র চন্দ্র ভদ্র লিখেছেন, ‘নাট্যব্যক্তিত্ব শহীদ প্যারী মোহন আদিত্য’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মতিয়ার রহমান খান লিখেছেন, ‘প্যারী মোহন আদিত্যকে যেমন দেখেছি’।
শ্রীপ্রমথ রঞ্জন শর্মা লিখেছেন, ‘প্যারী মোহন এক বিস্মৃত ভক্তের নাম’। সৎসঙ্গ বাংলাদেশ এবং সৎসঙ্গ সংবাদ এর সম্পাদক শ্রীরাস বিহারী আদিত্য লিখেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ছোট ভাইয়ের আত্মত্যাগ’। সুব্রত আদিত্য সহ-সম্পাদক (সৎসঙ্গ বাংলাদেশ) লিখেছেন, ‘অকুতোভয় সৈনিক প্যারী মোহন আদিত্যের ঐতিহাসিক ভূমিকা’। বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ হযরত আলী লিখেছেন, ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী প্যারী মোহন আদিত্য একটি প্রদীপ্ত সংগ্রামী নাম’। মহান এই শহিদ বুদ্ধিজীবীর মৃত্যুদিবসে তাঁর পুণ্য স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।